ঢাকা ০১:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সীমাহীন দূর্নীতির অভিযোগের পরেও বহাল তবিয়তে মোহনপুরের ইউএনও আয়শা সিদ্দিকা হালুয়াঘাটে ভারতীয় অবৈধ ২০ বোতল মদসহ আটক ৩ নবাগত নির্বাহী অফিসারের সাথে প্রতিষ্ঠান প্রধানগণের শুভেচ্ছা বিনিময় নরসিংদীর ফসলের মাঠ থেকে সিএনজি চালকের মরদেহ উদ্ধার কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই ফরিদপুর-মাগুরা রেলপথ প্রকল্পের ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর পর্যটনে দর্শনার্থীদের সুবিদায় নদী খনন তালা ভেঙ্গে কাপড় ব্যবসায়ীর দোকানে চুরি !! রাজশাহীতে চাঁদাবাজি ও দখলদারত্ব বন্ধে কঠোর হুশিয়ারি যুবদল নেতা রবি’র বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সংঘর্ষের ঘটনায় রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে অষ্ঠপ্রহর ব্যাপি হরিনাম মহাযঙ্ঘ মহোৎসব

অনিয়ম আর দুর্নীতির কারখানা রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ)

রাজশাহী প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় : ১২:৫৭:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জুলাই ২০২৪ ৬৮ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দুর্নীতির আরেক নাম রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ) । এদের নামে এত অভিযোগ সাধারণ মানুষের, এত দূর্নীতি সেগুলি নিয়ে নিউজ এর অভাব নেই। এদের দূর্নীতি নিয়ে নিউজ করা আর কাগজ নষ্ট একই বিষয়। নিউজের পর ব্যবস্থা নিবো, তদন্ত করা হবে, দুদকে অভিযোগ, দুদকের তদন্ত এই পর্যন্ত শেষ। আজ পর্যন্ত না দুদক না সরকার কেউ করে নাই এদের বিচার। হঠাৎ জানা যায় পরিচয় গোপন করে সেবাগ্রহীতা সেজে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অফিসে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

ঘুস ছাড়া ভবনের প্ল্যান যেমন পাশ হয় না, তেমনি ঘুসের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে ভবনের উচ্চতা। যে যত বেশি ঘুস দিতে পারে ততো বেশি তলা ভবন নির্মাণের প্ল্যান দেওয়া হয়। সেখানে ভবনের সামনে পেছনের সড়কের প্রশস্ততার বিষয়টি মোটেও নির্ভর করে না। অপ্রশস্ত সড়কের পার্শ্ববর্তী জায়গায় বহুতল ভবনের প্ল্যান দেওয়া হয় চাহিদামতো ঘুস দিতে পারলে।

রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অথরাইজড শাখা বা প্ল্যান পাশ শাখায় ঘুস ছাড়া কোন প্ল্যান পাশ হয় না। নির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়ে গত ০৭ জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ (রবিবার) দুপুর ১ টায় আরডিএ ভবনে দিনভর অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের এনফোর্সমেন্ট টিম। দুদকের সরকারি পরিচালক আমির হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি টিম অভিযান পরিচালনা করে। সাধারন মানুষ সেজে ঘটনার সত্যতা বের করতে দুদক ৪ সদস্য এর একটি টিম অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযোগ সত্যতা পেয়ে জব্দ করা হয়েছে প্ল্যান পাশের রেজিস্টার বহি ও সংশ্লিষ্ট নথিপত্র। দুদকের সংশ্লিষ্ট সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে।

পরে আরডিএর একজন কর্মকর্তার নিকট হতে জানা যায় , দুদকের রাজশাহী সমন্বিত জেলা কার্যালয় হতে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হচ্ছে । উক্ত অভিযানে ৭ তলা ভবনের প্ল্যান পাসের জন্য এক লাখ ও ১০ তলা ভবনের জন্য ২ লাখ টাকা না দিলে প্ল্যান পাস হয় না মর্মে কতিপয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদকের এই অভিযান । আরডিএর অথরাইজড অফিসার আবুল কালাম আজাদের সাথে অনেকক্ষণ সাক্ষাতের পর প্ল্যান পাসের রেজিস্টার বহি ও সংশ্লিষ্ট নথিপত্র জব্দ করে নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট হতে রোববার ৭টি অভিযোগের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তার মধ্যে আরডিএ অফিসে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে জব্দ করা হয়েছে প্ল্যান পাশের রেজিস্টার বহি ও সংশ্লিষ্ট নথিপত্র। অভিযানকালে সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

অভিযোগ রয়েছে আরও আরডিএ চেয়ারম্যান মোঃ জিয়াউল হকের নামে, বিভিন্ন রিয়েল এস্টেটের মালিকের সঙ্গে ইনার ঘুষ লেনদেন এর কঠিন পাকাপোক্ত সম্পর্ক। সব রিয়েল এস্টেটের তথ্য না পেলেও গ্রীন প্লাজা রিয়েল এস্টেটের মালিক মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে চেয়ারম্যান সহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের আর্থিক লেনদেন এর ভালোবাসা। বেশ কিছুদিন আগে গ্রীন প্লাজা রিয়েল এস্টেটের ২ টা বিল্ডিং অনিয়ম করে ঘুষ দিয়ে বিল্ডিং সম্পুর্ন করা এরপর গ্রাহকের সাথে প্রতারণার নিউজ হয়। এরপর চেয়ারম্যান নিজে গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন বাড়ি ভাঙ্গার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই সেটা ভাঙ্গা হবে। কিন্তু রহস্য জনক ভাবে সেই বিল্ডিং এখনও দাঁড়িয়ে। শিরোইল কাঁচাবাজার সংলগ্ন একটি বিল্ডিং এর কাজ বন্ধ করে দেওয়ার পর সেটাও আবার রহস্যজনকভাবে কাজ শুরু হয়ে যায়। গ্রীন প্লাজা রিয়েল এস্টেটের পরিচালক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান আরডিএ এর অনুমোদনের সমস্ত ডকুমেন্ট গনমাধ্যম কর্মীদের দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। তবুও চলছে তার বিল্ডিংয়ের কাজ।

রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ) অথরাইজডের ৩য় জোন যা এখন বিলুপ্ত ‌। যখন অথরাইজডের ৩য় জোন ছিল সেই জোনের প্রধান অথরাইজড অফিসার ছিল তার হাত ধরে শুরু হয় ঘুস নিয়ে প্লান পাস করা,নকশা ও বিল্ডিং কোড অমান্য করা। টাকা ছাড়া কোন প্লান পাস না করার। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইমারত বিধিমালা ভঙ্গ করে শুভ পেট্রোল পাম্পের পিছনে ১০ তলা ভবন, শহীদ মিনার এর পাশে ১৪ ফিট রাস্তায় আট তলা বিল্ডিং, মুন লাইট এর পিছনে কিছু ভবনো ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ অফিসের পেছনে বেশ কিছু ভবন যা নকশা ও বিল্ডিং কোড অমান্য করে অবৈধভাবে ঘুষ লেনদেন করে প্লেন পাশ সহ সমস্ত অনিয়ম করে ও বিল্ডিং গুলি দাঁড়িয়ে রয়েছে। ঘুসের বিনিময়ে প্ল্যান দেওয়ার ফলে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ইমারত বিধিমালা ভঙ্গ করে গড়ে উঠা শত শত ভবনের একটির বিরুদ্ধেও কোনো আইনি ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা গেছে, শুধুমাত্র ঘুসের বিনিময়ে প্ল্যান দেওয়ার ফলে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ইমারত বিধিমালা ভঙ্গ করে গড়ে উঠা শত শত ভবনের একটির বিরুদ্ধেও কোনো আইনি ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ইমারত বিধিমালা ভঙ্গ করে রাজশাহীর লক্ষীপুর এলাকায় গড়ে উঠেছে পুপলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার ভবন। নগরীর কাজিহাটা এলাকায় গ্র্যান্ড রিভারভিউ হোটেল, ডায়াবেটিস হাসপাতাল ভবন, কুমারপাড়ার তিনটি বহুতল ভবন, হাইটেক হাসপাতাল ভবনসহ কয়েকশ বহুতল রাতারাতি গড়ে উঠেছে নগরীতে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলেও এসব ভবন মালিকদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়নি আরডিএর অথরাইজড শাখা।

এছাড়া আরো অভিযোগ ও সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, রাজশাহী নগরীতে রাতারাতি পুকুর ভরাটের জায়গাতেও বহুতল ভবনের প্ল্যান দিয়েছেন। আরডিএর প্ল্যান পেয়ে পুকুর ভরাটের জায়গাতেও গড়ে উঠেছে একাধিক বহুতল ভবন। এসব প্ল্যান পাসের ক্ষেত্রে মোটা অংকের ঘুসের লেনদেন হয়ে থাকে বলে দুদকের কাছে অভিযোগ গেছে।

এছাড়া গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে আরো অভিযোগ রয়েছে সাধারন মনুষের সেগুলি হলো, রাজশাহী মহানগরীর দেবিশিংপাড়া এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ আলীর বাড়ির পাশেই বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন গোলাম আজম। আরডিএ অনুমোদিত নকশার বাইরে এ ভবন নির্মাণ হয়। এ কারণে আরডিএতে অভিযোগ করে এরশাদ আলীর পরিবার। অভিযোগ তদন্ত করে অনিয়মের সত্যতা পেয়ে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার পাশাপাশি ভবনটির চারদিকের প্ল্যানবহির্ভূত বর্ধিত অংশ ভেঙে ফেলতে চিঠি দেয় আরডিএ। কিন্তু ওই নির্দেশনা আমলে নেননি গোলাম আজম।

একইভাবে আরেকটি পরিকল্পনাবহির্ভূত বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে নগরীর রানীবাজার টাইলসপট্টি এলাকার একটি ড্রেন দখল করে। এ ভবনের মালিক পাভেল, তার মা ও বোন। অভিযোগ পেয়ে আরডিএ ভবনটির মালিককে নির্মাণকাজ বন্ধের পাশাপাশি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। পরবর্তীতে কাজ বন্ধ হলেও উক্ত জায়গা হতে তৈরিকৃত নির্মাণ সামগ্রী সরানো হয় নাই । এদিকে বিল্ডিং কোড অমান্য করে মহানগরীর লক্ষ্মীপুরে জিপিও পোস্ট অফিসের উত্তরে একটি বহুতল ভবন নির্মাণকাজ শুরু হয় তিন বছর আগে। একপর্যায়ে ভবনটির দক্ষিণের বাড়িতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ভুক্তভোগী আরডিএতে অভিযোগ দেন। কিন্তু একাধিকবার কারণ দর্শাতে বলার পরও এর নির্মাণকাজ বন্ধ করতে পারেনি আরডিএ। গত বছর শেষের দিকে ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। ভবনটি একটি হাসপাতাল ভাড়া নিয়েছে।

এ সমস্ত বিষয় নিয়ে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ) চেয়ারম্যান মোঃ জিয়াউল হক কে তার সরকারি নাম্বার থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া হয়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

অনিয়ম আর দুর্নীতির কারখানা রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ)

আপডেট সময় : ১২:৫৭:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জুলাই ২০২৪

দুর্নীতির আরেক নাম রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ) । এদের নামে এত অভিযোগ সাধারণ মানুষের, এত দূর্নীতি সেগুলি নিয়ে নিউজ এর অভাব নেই। এদের দূর্নীতি নিয়ে নিউজ করা আর কাগজ নষ্ট একই বিষয়। নিউজের পর ব্যবস্থা নিবো, তদন্ত করা হবে, দুদকে অভিযোগ, দুদকের তদন্ত এই পর্যন্ত শেষ। আজ পর্যন্ত না দুদক না সরকার কেউ করে নাই এদের বিচার। হঠাৎ জানা যায় পরিচয় গোপন করে সেবাগ্রহীতা সেজে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অফিসে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

ঘুস ছাড়া ভবনের প্ল্যান যেমন পাশ হয় না, তেমনি ঘুসের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে ভবনের উচ্চতা। যে যত বেশি ঘুস দিতে পারে ততো বেশি তলা ভবন নির্মাণের প্ল্যান দেওয়া হয়। সেখানে ভবনের সামনে পেছনের সড়কের প্রশস্ততার বিষয়টি মোটেও নির্ভর করে না। অপ্রশস্ত সড়কের পার্শ্ববর্তী জায়গায় বহুতল ভবনের প্ল্যান দেওয়া হয় চাহিদামতো ঘুস দিতে পারলে।

রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অথরাইজড শাখা বা প্ল্যান পাশ শাখায় ঘুস ছাড়া কোন প্ল্যান পাশ হয় না। নির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়ে গত ০৭ জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ (রবিবার) দুপুর ১ টায় আরডিএ ভবনে দিনভর অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের এনফোর্সমেন্ট টিম। দুদকের সরকারি পরিচালক আমির হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি টিম অভিযান পরিচালনা করে। সাধারন মানুষ সেজে ঘটনার সত্যতা বের করতে দুদক ৪ সদস্য এর একটি টিম অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযোগ সত্যতা পেয়ে জব্দ করা হয়েছে প্ল্যান পাশের রেজিস্টার বহি ও সংশ্লিষ্ট নথিপত্র। দুদকের সংশ্লিষ্ট সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে।

পরে আরডিএর একজন কর্মকর্তার নিকট হতে জানা যায় , দুদকের রাজশাহী সমন্বিত জেলা কার্যালয় হতে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হচ্ছে । উক্ত অভিযানে ৭ তলা ভবনের প্ল্যান পাসের জন্য এক লাখ ও ১০ তলা ভবনের জন্য ২ লাখ টাকা না দিলে প্ল্যান পাস হয় না মর্মে কতিপয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদকের এই অভিযান । আরডিএর অথরাইজড অফিসার আবুল কালাম আজাদের সাথে অনেকক্ষণ সাক্ষাতের পর প্ল্যান পাসের রেজিস্টার বহি ও সংশ্লিষ্ট নথিপত্র জব্দ করে নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট হতে রোববার ৭টি অভিযোগের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তার মধ্যে আরডিএ অফিসে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে জব্দ করা হয়েছে প্ল্যান পাশের রেজিস্টার বহি ও সংশ্লিষ্ট নথিপত্র। অভিযানকালে সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

অভিযোগ রয়েছে আরও আরডিএ চেয়ারম্যান মোঃ জিয়াউল হকের নামে, বিভিন্ন রিয়েল এস্টেটের মালিকের সঙ্গে ইনার ঘুষ লেনদেন এর কঠিন পাকাপোক্ত সম্পর্ক। সব রিয়েল এস্টেটের তথ্য না পেলেও গ্রীন প্লাজা রিয়েল এস্টেটের মালিক মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে চেয়ারম্যান সহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের আর্থিক লেনদেন এর ভালোবাসা। বেশ কিছুদিন আগে গ্রীন প্লাজা রিয়েল এস্টেটের ২ টা বিল্ডিং অনিয়ম করে ঘুষ দিয়ে বিল্ডিং সম্পুর্ন করা এরপর গ্রাহকের সাথে প্রতারণার নিউজ হয়। এরপর চেয়ারম্যান নিজে গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন বাড়ি ভাঙ্গার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই সেটা ভাঙ্গা হবে। কিন্তু রহস্য জনক ভাবে সেই বিল্ডিং এখনও দাঁড়িয়ে। শিরোইল কাঁচাবাজার সংলগ্ন একটি বিল্ডিং এর কাজ বন্ধ করে দেওয়ার পর সেটাও আবার রহস্যজনকভাবে কাজ শুরু হয়ে যায়। গ্রীন প্লাজা রিয়েল এস্টেটের পরিচালক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান আরডিএ এর অনুমোদনের সমস্ত ডকুমেন্ট গনমাধ্যম কর্মীদের দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। তবুও চলছে তার বিল্ডিংয়ের কাজ।

রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ) অথরাইজডের ৩য় জোন যা এখন বিলুপ্ত ‌। যখন অথরাইজডের ৩য় জোন ছিল সেই জোনের প্রধান অথরাইজড অফিসার ছিল তার হাত ধরে শুরু হয় ঘুস নিয়ে প্লান পাস করা,নকশা ও বিল্ডিং কোড অমান্য করা। টাকা ছাড়া কোন প্লান পাস না করার। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইমারত বিধিমালা ভঙ্গ করে শুভ পেট্রোল পাম্পের পিছনে ১০ তলা ভবন, শহীদ মিনার এর পাশে ১৪ ফিট রাস্তায় আট তলা বিল্ডিং, মুন লাইট এর পিছনে কিছু ভবনো ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ অফিসের পেছনে বেশ কিছু ভবন যা নকশা ও বিল্ডিং কোড অমান্য করে অবৈধভাবে ঘুষ লেনদেন করে প্লেন পাশ সহ সমস্ত অনিয়ম করে ও বিল্ডিং গুলি দাঁড়িয়ে রয়েছে। ঘুসের বিনিময়ে প্ল্যান দেওয়ার ফলে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ইমারত বিধিমালা ভঙ্গ করে গড়ে উঠা শত শত ভবনের একটির বিরুদ্ধেও কোনো আইনি ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা গেছে, শুধুমাত্র ঘুসের বিনিময়ে প্ল্যান দেওয়ার ফলে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ইমারত বিধিমালা ভঙ্গ করে গড়ে উঠা শত শত ভবনের একটির বিরুদ্ধেও কোনো আইনি ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ইমারত বিধিমালা ভঙ্গ করে রাজশাহীর লক্ষীপুর এলাকায় গড়ে উঠেছে পুপলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার ভবন। নগরীর কাজিহাটা এলাকায় গ্র্যান্ড রিভারভিউ হোটেল, ডায়াবেটিস হাসপাতাল ভবন, কুমারপাড়ার তিনটি বহুতল ভবন, হাইটেক হাসপাতাল ভবনসহ কয়েকশ বহুতল রাতারাতি গড়ে উঠেছে নগরীতে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলেও এসব ভবন মালিকদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়নি আরডিএর অথরাইজড শাখা।

এছাড়া আরো অভিযোগ ও সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, রাজশাহী নগরীতে রাতারাতি পুকুর ভরাটের জায়গাতেও বহুতল ভবনের প্ল্যান দিয়েছেন। আরডিএর প্ল্যান পেয়ে পুকুর ভরাটের জায়গাতেও গড়ে উঠেছে একাধিক বহুতল ভবন। এসব প্ল্যান পাসের ক্ষেত্রে মোটা অংকের ঘুসের লেনদেন হয়ে থাকে বলে দুদকের কাছে অভিযোগ গেছে।

এছাড়া গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে আরো অভিযোগ রয়েছে সাধারন মনুষের সেগুলি হলো, রাজশাহী মহানগরীর দেবিশিংপাড়া এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ আলীর বাড়ির পাশেই বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন গোলাম আজম। আরডিএ অনুমোদিত নকশার বাইরে এ ভবন নির্মাণ হয়। এ কারণে আরডিএতে অভিযোগ করে এরশাদ আলীর পরিবার। অভিযোগ তদন্ত করে অনিয়মের সত্যতা পেয়ে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার পাশাপাশি ভবনটির চারদিকের প্ল্যানবহির্ভূত বর্ধিত অংশ ভেঙে ফেলতে চিঠি দেয় আরডিএ। কিন্তু ওই নির্দেশনা আমলে নেননি গোলাম আজম।

একইভাবে আরেকটি পরিকল্পনাবহির্ভূত বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে নগরীর রানীবাজার টাইলসপট্টি এলাকার একটি ড্রেন দখল করে। এ ভবনের মালিক পাভেল, তার মা ও বোন। অভিযোগ পেয়ে আরডিএ ভবনটির মালিককে নির্মাণকাজ বন্ধের পাশাপাশি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। পরবর্তীতে কাজ বন্ধ হলেও উক্ত জায়গা হতে তৈরিকৃত নির্মাণ সামগ্রী সরানো হয় নাই । এদিকে বিল্ডিং কোড অমান্য করে মহানগরীর লক্ষ্মীপুরে জিপিও পোস্ট অফিসের উত্তরে একটি বহুতল ভবন নির্মাণকাজ শুরু হয় তিন বছর আগে। একপর্যায়ে ভবনটির দক্ষিণের বাড়িতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ভুক্তভোগী আরডিএতে অভিযোগ দেন। কিন্তু একাধিকবার কারণ দর্শাতে বলার পরও এর নির্মাণকাজ বন্ধ করতে পারেনি আরডিএ। গত বছর শেষের দিকে ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। ভবনটি একটি হাসপাতাল ভাড়া নিয়েছে।

এ সমস্ত বিষয় নিয়ে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ) চেয়ারম্যান মোঃ জিয়াউল হক কে তার সরকারি নাম্বার থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া হয়নি।