ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে খালবলা বাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালে ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে অশালীন কথা বলায় এক শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্রীরা। গত রোববার দুপুরে
প্রায় দুই শতাধিক ছাত্রী ক্লাস বর্জন করে উক্ত বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়।
সরজমিনে দেখা যায়, ছাত্রীরা তাদের ইংরেজি শিক্ষক নূর মোহাম্মদের পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ করছে। এ সময় কয়েকজন ছাত্রী ( তৈয়বা খানম, হাবিবা আক্তার, লীলীমা জাহান) জানায়, গত বুধবার নবম শ্রেণির
ইংরেজি ক্লাস নেওয়ার সময় নূর মোহাম্মদ স্যার তাদের কাছে জানতে চান কে কে আওয়ামী লীগ করে। তখন ছাত্রীরা স্যারকে জানায়, তারা রাজনীতি বুঝে না। পড়াশোনা করার জন্য বিদ্যালয়ে এসেছে। তখন স্যার
প্রশ্ন করেন তোদের বাবারা কে কোন দল করেন। আওয়ামী লীগ করে থাকলে তোদের বাবার পা হাঁটুর নিচ থেকে ভেঙে দেওয়া হবে। তারপর বলতে থাকেন আমি বুইড়া মানুষ, আমার কাছে প্রাইভেট পড়তে মজা
লাগে না। তোদের পছন্দ চেংরা শিক্ষক। তাই চেংরা শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়তে যাস। আমার কাছে প্রাইভেট না পড়লে তোদের কাউকে ইংরেজি বিষয়ে পাস নম্বর দেওয়া হবে না। শিক্ষকের মুখ থেকে এ ধরনের
অশ্লীল কথাবার্তা শোনার পর ছাত্রীরা শ্রেণিকক্ষে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করে। পরে শ্রেণিকক্ষ থেকে বের হয়ে ছাত্রীরা মাঠে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। কিন্তু গত বুধবার শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকের অশ্লীল কথাবার্তার
অভিযোগের বিষয়টি সুরাহা হয়নি। পরে রোববার ছাত্রীরা বিদ্যালয়ে এসে প্রথমেই ক্লাস বর্জন শুরু করে। তারা বিদ্যালয়ের মাঠে জড়ো হয়ে ইংরেজি শিক্ষক নূর মোহাম্মদের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করতে
থাকে। এ সময় প্রধান শিক্ষক সফিকুল ইসলামকে ভবনের নিচতলায় এসে বিক্ষোভরত ছাত্রীদের শান্ত করার একাধিকবার চেষ্টা করেন। কিন্তু নূর মোহাম্মদের পদত্যাগ ছাড়া ছাত্রীরা কিছু শুনতে রাজী হয়নি।
এবিষয়ে শিক্ষক নূর মোহাম্মদ বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছে তা সম্পুর্ন মিথ্যা। স্কুলের হেড মাস্টার সহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক আমার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন যাবত ষড়যন্ত্র করে আসছে। এই ষড়যন্ত্রের
একটা হলো অভিভাবকদের টাকা দিয়ে আমার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের আন্দোলনে নামিয়ে দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার একতরফা ভাবে আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। তিনি আরো বলেন,
বিএনপি দলের সাথে আমার সম্পর্ক থাকায় আওয়ামী সরকারের সময় আমি জেল খেটেছি এটা করেছে হেড মাস্টারসহ কয়েকজন আওয়ামী পন্থী শিক্ষক। তাই এরা এখন আবারও আওয়ামী সরকারের এজেন্ট
হিসবে কাজ করছে। আমি বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে এদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি চাই।
প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন, একজন শিক্ষকের কারণে বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট হতে চলেছে। তিনি ছাত্রীদের কাছ থেকে জেনেছেন গত বুধবার নূর মোহাম্মদ শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের সময়
ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে অশালীন কথাবার্তা বলেছেন। সেই থেকে ঘটনার সূত্রপাত। এ বিষয়টি তিনি উর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষকে অবগত করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সারমিনা সাত্তার বলেন, শিক্ষক নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে সহকর্মীদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগের তদন্ত চলামন রয়েছে। এরমধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে ছাত্রীদের সাথে
অশালীন আচরণের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ রফিকুল ইসলাম। নির্বাহী সম্পাদক:মো: নাইমুল ইসলাম, বিজ্ঞাপন এবং নিউজ: [email protected] . www.dailysarabela.com । ঢাকা অফিস: বিসিআইসি ভবন ১১ তলা ৩০-৩১ দিলকুশা বানিজ্যিক এলাকা ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত। কিশোরগঞ্জ অফিস ৯৭, হয়বত নগর ,কিশোরগঞ্জ থেকে পরিচালিত।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত সারাবেলা ২০২৪