ঢাকা ০১:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
এক ইজারায় নদী দখল ; অবৈধ পন্থায় বালু উত্তোলন।। নান্দাইলে সাংবাদিকদের সাথে বিএনপি নেতা মামুনের মতবিনিময় সভা চির অবিশ্বাসী নারীচির অবিশ্বাসী নারী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯ বছরেও চালু হয়নি ঢাকামুখি যান চলাচল নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯ বছরেও চালু হয়নি ঢাকামুখি যান চলাচল ভৈরব পঞ্চবটীতে প্রতিবেশীর বাসার ওয়্যারড্রোবে মিললো নিখোঁজ শিশুর মরদেহ ভৈরবে কার্ভার ভ্যান ও সিএনজির সংঘর্ষে ৫ জন নিহত তাড়াইল উপজেলা জিয়া সাংস্কৃতিক সংগঠনের কমিটি অনুমোদন । রাজশাহী আঞ্চলিক লোক-প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এখনও বৈষম্যর শিকার কর্মচারীরা ধনবাড়ীতে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত

‘তুমি কে আমি কে? রাজাকার’ স্লোগানের জেরে মধ্যরাতে উত্তপ্ত জাবি: আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদের অভিযোগ

জাবি প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১১:০৬:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ জুলাই ২০২৪ ৫০ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

‘তুমি কে আমি কে? রাজাকার’ স্লোগানের জেরে মধ্যরাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে৷ এসময় স্লোগান দেয়ার কারণে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ডাইনিংয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ ও মোবাইল ফোন চেক করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ হলের সামনে জড়ো হয়েছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা৷

রবিবার (১৪ জুলাই) রাত সাড়ে ১১ টায় ‘আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে’ এমন খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় জড়ো হন শিক্ষার্থীরা ৷ এরপর তারা একটি প্রতিবাদী মিছিল নিয়ে রবীন্দ্রনাথ হলের সামনে আসেন। রাত একটায় সর্বশেষ তথ্যমতে, শিক্ষার্থীরা হলের সামনে অবস্থান করছেন।

 

এসময় শিক্ষার্থীদের তুমি কে, আমি কে? রাজাকার রাজাকার; মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, রাষ্ট্র কারো বাপের না, চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘লাখো শহীদের রক্তে কেনা, দেশটা কারো বাপের না’ আমার ভাই আটক কেন? জবাব চাই ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

 

রবীন্দ্রনাথ হলের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া “তুমি কে আমি কে? রাজাকার রাজাকার” স্লোগানে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেদের হলেও এমন স্লোগান দেয়ার পরিকল্পনা করেন ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা৷ এমন সময় মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের মো. সাঈফ খান ৪৯ ব্যাচের ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে একটি ম্যাসেজ দেন। নিচ তলার ১২৪ নং কক্ষ থেকে স্লোগান পুরো হলে ছড়িয়ে পড়ে৷

 

শিক্ষার্থীরা সমস্বরে স্লোগান দিতে শুরু করলে পলিটিকাল ব্লক থেকে ৪৮ ব্যাচের সিনিয়ররা এসে তাদের সবাইকে ডেকে ডাইনিংয়ে আসতে বলে। ১২৪ নং কক্ষ থেকে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের কাউসার আলম আরমান, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের আশিক ও ইংরেজি বিভাগের জাহিদকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

 

এসময় ডাইনিং হলে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ডাইনিং হলে ডেকে আনার পর শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকার’ স্লোগান দেয়ার কারণ জিজ্ঞেস করা হয়। এসময় ‘শিবির’ সন্দেহে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন নিয়ে ম্যাসেঞ্জারের ম্যাসেজ চেক করা হয়৷ এসময় দীর্ঘসময় পর্যন্ত ডাইনিং হল থেকে চিৎকার চেঁচামেচি শুনতে পান হলের শিক্ষার্থীরা৷ পরে সন্দেহজনক কিছু না পেয়ে তাদের স্লোগানের জন্য ক্ষমা চাইতে বলা হয়৷ ছাত্রলীগের নেতারা এসময় হল প্রভোস্ট অধ্যাপক নাজমুল হাসান তালুকদারকে সেখানে নিয়ে আসেন৷ হল প্রভোস্টের উপস্থিতিতে ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা তাদের কাছে ক্ষমা চান। এরপর তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। তবে তাদের কোন প্রকার মারধর করা হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন তারা৷

 

এসময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, রাত ১১টায় আমরা খবর পাই আমাদের কয়েকজন আন্দোলনকারী সহযোদ্ধাকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আমরা খবর পেয়ে সহকর্মীদের উদ্ধার করতে এসেছি। কোটা আন্দোলন সারাদেশের শিক্ষার্থীদের একটি যৌক্তিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন। এ আন্দোলনে অংশ নিয়ে কেউ যদি নির্যাতনের শিকার হয় তা শক্ত হাতে মোকাবেলা করা হবে৷

 

এসব ব্যাপারে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক নাজমুল হাসান তালুকদার বলেন, হলের সামনে শিক্ষার্থীদের মিছিলের কথা শুনে আমি কিছুক্ষণ আগে হলে এসেছি৷ তবে ঘটনা বিস্তারিত বুঝতে পারিনি। সম্ভবত কোনো স্লোগান দেয়াকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়ে৷ আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

‘তুমি কে আমি কে? রাজাকার’ স্লোগানের জেরে মধ্যরাতে উত্তপ্ত জাবি: আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদের অভিযোগ

আপডেট সময় : ১১:০৬:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ জুলাই ২০২৪

‘তুমি কে আমি কে? রাজাকার’ স্লোগানের জেরে মধ্যরাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে৷ এসময় স্লোগান দেয়ার কারণে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ডাইনিংয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ ও মোবাইল ফোন চেক করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ হলের সামনে জড়ো হয়েছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা৷

রবিবার (১৪ জুলাই) রাত সাড়ে ১১ টায় ‘আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে’ এমন খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় জড়ো হন শিক্ষার্থীরা ৷ এরপর তারা একটি প্রতিবাদী মিছিল নিয়ে রবীন্দ্রনাথ হলের সামনে আসেন। রাত একটায় সর্বশেষ তথ্যমতে, শিক্ষার্থীরা হলের সামনে অবস্থান করছেন।

 

এসময় শিক্ষার্থীদের তুমি কে, আমি কে? রাজাকার রাজাকার; মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, রাষ্ট্র কারো বাপের না, চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘লাখো শহীদের রক্তে কেনা, দেশটা কারো বাপের না’ আমার ভাই আটক কেন? জবাব চাই ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

 

রবীন্দ্রনাথ হলের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া “তুমি কে আমি কে? রাজাকার রাজাকার” স্লোগানে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেদের হলেও এমন স্লোগান দেয়ার পরিকল্পনা করেন ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা৷ এমন সময় মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের মো. সাঈফ খান ৪৯ ব্যাচের ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে একটি ম্যাসেজ দেন। নিচ তলার ১২৪ নং কক্ষ থেকে স্লোগান পুরো হলে ছড়িয়ে পড়ে৷

 

শিক্ষার্থীরা সমস্বরে স্লোগান দিতে শুরু করলে পলিটিকাল ব্লক থেকে ৪৮ ব্যাচের সিনিয়ররা এসে তাদের সবাইকে ডেকে ডাইনিংয়ে আসতে বলে। ১২৪ নং কক্ষ থেকে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের কাউসার আলম আরমান, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের আশিক ও ইংরেজি বিভাগের জাহিদকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

 

এসময় ডাইনিং হলে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ডাইনিং হলে ডেকে আনার পর শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকার’ স্লোগান দেয়ার কারণ জিজ্ঞেস করা হয়। এসময় ‘শিবির’ সন্দেহে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন নিয়ে ম্যাসেঞ্জারের ম্যাসেজ চেক করা হয়৷ এসময় দীর্ঘসময় পর্যন্ত ডাইনিং হল থেকে চিৎকার চেঁচামেচি শুনতে পান হলের শিক্ষার্থীরা৷ পরে সন্দেহজনক কিছু না পেয়ে তাদের স্লোগানের জন্য ক্ষমা চাইতে বলা হয়৷ ছাত্রলীগের নেতারা এসময় হল প্রভোস্ট অধ্যাপক নাজমুল হাসান তালুকদারকে সেখানে নিয়ে আসেন৷ হল প্রভোস্টের উপস্থিতিতে ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা তাদের কাছে ক্ষমা চান। এরপর তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। তবে তাদের কোন প্রকার মারধর করা হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন তারা৷

 

এসময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, রাত ১১টায় আমরা খবর পাই আমাদের কয়েকজন আন্দোলনকারী সহযোদ্ধাকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আমরা খবর পেয়ে সহকর্মীদের উদ্ধার করতে এসেছি। কোটা আন্দোলন সারাদেশের শিক্ষার্থীদের একটি যৌক্তিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন। এ আন্দোলনে অংশ নিয়ে কেউ যদি নির্যাতনের শিকার হয় তা শক্ত হাতে মোকাবেলা করা হবে৷

 

এসব ব্যাপারে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক নাজমুল হাসান তালুকদার বলেন, হলের সামনে শিক্ষার্থীদের মিছিলের কথা শুনে আমি কিছুক্ষণ আগে হলে এসেছি৷ তবে ঘটনা বিস্তারিত বুঝতে পারিনি। সম্ভবত কোনো স্লোগান দেয়াকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়ে৷ আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছি।