পাকিস্তানে পড়াশোনা,সৌদি আরবে ব্যবসা দেশে দু’টি মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আসাদ আল-হুসাইন
- আপডেট সময় : ০৯:৪৯:৫০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ জুলাই ২০২৪ ৬৫ বার পড়া হয়েছে
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায় আসাদ আল হোসাইনের বিরুদ্ধে জিআর ২৩/২০২৪ (সদর) মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা জারীর আদেশ হয়েছে। স্বাধীনতার পরে তিনি পাকিস্তানে চলে যান এবং পড়া লেখা ঐ দেশে করেন এবং পাকিস্তান থেকে সরাসরি সৌদি আরবে পাড়িদেন ও ব্যবসা শুরুকরেন। এলাকা সূত্রে জানা যায় দু’টি মাদ্রাসার প্রধান হলেও, বছরের ৬ মাস ব্যাবসা করেন সৌদি আরবে । ১৯৭১ সালে পিতা পুত্রের নেতিবাচক ভূমিকার জন্য তারই পিতা আব্দুছ ছালামকে মাদরাসার দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়। ১৯৭৫ সালে পর আবার দায়িত্বে আসেন তার পিতা আব্দুছ ছালাম । পরবর্তীতে এক সময় আসাদের ছোট ভাই আসজাদ হোসেন দিলসাদ ও আফজল খান সে ধারাবাহিকতায় মুহতামিম হিসেবে আসাদ আল হোসাইন হয়েছিলেন। তিনি ব্যবসায়ি কারণে বিভিন্ন সময়ে তাঁর স্বজনকে তার সহযোগিতায় দায়িত্ব দিয়ে থাকেন। আজফার খান ২ বছর ৬ মাস প্রায়। তাঁর পৃর্বে দায়িত্বে ছিলেন আসজাদ হোসেন দিলশাদ প্রায় ৭ বছর ও আফজল খান ২ বছর, উনারা আসাদ আল হোসাইনের পরিবারের সদস্য, এ ভাবে তাঁর দুর্নীতি শুরু হলে। এলাকাবাসী তাঁর বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ করেন । মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আখাইকুড়া ইউনিয়নধীন মিরপুর হোসাইনিয়া আরাবিয়া মাদরাসা ও শারজান বিবি মহিলা মাদরাসার মুহতামিম (প্রধান শিক্ষক) পদে রয়েছেন একই ব্যক্তি। দাতাদের দানকৃত অর্থ নিজের হাতে রেখে একক ভাবে তার ইচ্ছামতো ব্যয় করেন এবং উদ্ধৃত্ত টাকা মাদরাসার ব্যাংক হিসাবে জমা না রেখে ব্যক্তিগত ব্যয় নির্বাহ করেন। দাতাদের দেয়া অর্থ, মাদরাসার বিভিন্ন কাজ, ওয়াজ মাহফিল আয়োজনের, ব্যয় ভাউচার। সৌদি আরব অবস্থান, ভারপ্রাপ্ত মুহতামিম নিয়োগ ইত্যাদি কোন কিছুতেই তিনি মাদরাসার ব্যবস্থাপনা পরিষদের অনুমোদন নেননা। তার সুবিধা ও জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মাদরাসার ব্যবস্থাপনা পরিষদের কোন সভা হতে দেননা। তার সুবিধা ও জরুরি প্রয়োজনে জরুরি সভা করলেও, মাদরাসার আয়-ব্যয়ের হিসাব দেননা। এভাবে তিনি অনুমানিক ১৫ লাখ টাকা আত্নসাৎ করেছেন। আয়-ব্যয়ের হিসাব চাইলেই তিনি তার আত্নীয়-স্বজন ও সহযোগে মারমুখী ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। এ কারণে একাধিকবার দাঙ্গা-হাঙ্গামাও হয়েছে। তার কাছ থেকে মাদরাসার আয়-ব্যয়ের হিসাব আদায়ে ব্যর্থ হয়ে মাদরাসার ব্যবস্থাপনা পরিষদের সাবেক সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) ফখরুজ্জামান মাদরাসা ত্যাগ করেন বিপুল সংখ্যক লোকজনকে নিয়ে ঐ মাদরাসার পাশেই আল-হেরা মিরপুর-পালপুর মাদরাসা নামে আরেকটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন।
মুহতামিমের এই সব দুর্নীতির কারনে তার বিরুদ্ধে নন জিআর ২৩/২০২৪ (সদর) মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা জারীর আদেশ হয়েছে। মৌলভীবাজার ১নং আমল গ্রহণকারী আদালতে ১৬৭/২৪ (সদর) মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। মুহতামিম আসাদ আল হোসাইনের এহেন স্বেচ্ছাচার-অনিয়ম-দূর্নীতিকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয়েছে তিনটি গ্রুপ। এর মধ্যে মাদরাসার ব্যবস্থাপনা পরিষদেই রয়েছে দুটি গ্রুপ। তৃতীয়টি হচ্ছে মুহতামিম ও তার সহযোগী স্বজনদের গ্রুপ। এলাকাবাসী জানান তিনটি গ্রুপের মধ্যে অনাকাঙ্খিত ঘটনার আশংকা রয়েছে এবং তা ঘটে যেতে পারে যেকোন সময়।মাদরাসার ব্যবস্থাপনা পরিষদের সভাপতি মাওঃ আব্দুল মছব্বির, সহ-সভাপতি মসুদ খান ও মাওঃ শেখ জুবায়ের আহমদ, কোষাধ্যক্ষ আব্দুর রকিব খান, সদস্য বিলাল উদ্দিন, আব্দুল কাদির, আব্দুল ওয়াদুদ, আবুল খয়ের, শুরমান মিয়া, খছরুজ্জামান, মুজিবুর রহমান, ছালেহ আহমদ, আজিজুল ইসলাম ও আশরাফ ফরাজী ভারপ্রাপ্ত মুহতামিম (অভিযুক্ত মুহতামিমের নিয়োগকৃত) এর কাছে মুহতামিম আসাদ আল হোসাইনের এসব স্বেচ্ছাচার-অনিয়ম-দূর্ণীতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সংখ্যাগরিষ্টরাই এর সত্যতা নিশ্চিত করে জানান- ১৯৫০ সালের দিকে মাওলানা ইউসুফ হোসাইন (খলিফা সাহেব) ও ক্বারী ইসরাইলের উদ্দ্যোগে মাওঃ ইলিয়াছ হোসাইনের বাংলোয় এ মাদরাসার সূচনা হয়। মাওলানা ইউসুফ হোসাইন (মিয়া ধন মিয়া/খলিফা সাহেব) ছিলেন প্রতিষ্ঠাকালীন মুহতামিম। এর ক্রমানুসারে খোরশিদ আলম, আব্দুল মছব্বির, শামসুল ইসলাম, আব্দুল কাইয়ুম, আব্দুছ ছালাম, জুবায়ের আহমদ, সৈয়দ মসউদ আহমদ, আসজাদ হোসেন দিলসাদ, আফজল খান ও বতর্মানে আসাদ আল হোসাইন।
পরবর্তীতে শেখ বদরুজ্জামান, নুর মিয়া, লাল মিয়া, আবদুল হাসিম গংরা মাদরাসা ও মসজিদের জন্য ভূমি দান করলে মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং মসজিদ নির্মিত হয়। মুহতামিম আসাদ আল হোসাইনের দাবী মিথ্যা ও ভিত্তিহীন উল্লেখ করে তারা মুহতামিমের কাছ থেকে আয়-ব্যয়ের হিসাব ও আত্নসাৎকৃত অর্থ উদ্ধারপূর্বক তাকে অপসারনে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মাদরাসার দাতা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ফারুক উদ্দিন ও নোমান আহমদ, যুক্তরাজ্য প্রবাসী আবু শাহজাহান, সোয়াইব মিয়া ও শিব্বির মিয়া একবাক্যে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তারাও মুহতামিমের দাবী মিথ্যা উল্লেখ করে প্রায় একই বক্তব্য দেন এবং এ অবস্থার অবসান ও দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি রক্ষায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।