সাত পৃষ্ঠার চিরকুট লিখে কলেজ ছাত্রীর আত্মহত্যা
- আপডেট সময় : ০৭:৩২:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ জুলাই ২০২৪ ৪৬ বার পড়া হয়েছে
ভুয়া সেনা সদস্য সেজে প্রতারণায় ফাঁদে ফেলে কলেজ ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসে সুমাইয়ার সাথে প্রথমে প্রেম ও পরে কৌশলে গোপনে বিয়ে করে শিপন নামে এক রাজমিস্ত্রী শ্রমিক। এরপর শুরু হয় সুমাইয়ার উপর শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন, আত্মহত্যার করে নিজের জীবন ইতি টানে সুমাইয়া।
শনিবার (১৩ জুলাই) দিবাগত রাত দশটার দিকে উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের বিশগিরিপাড়া গ্রামের মেয়ে গলায় ওড়না পেচিয়ে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন জান্নাতুল ফেরদৌসী সুমাইয়া (১৯) নামের এক গৃহবধূ। ফেসবুকে প্রেম ভালোবাসা ও অভিভাবকের অমতে বিয়ে করে যৌতুকের চাপে সংসারে বনিবনা না হওয়ায় অবশেষে গলায় ওড়না পেচিয়ে ৭ পৃষ্ঠার চিরকুট লিখে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন জান্নাতুল ফেরদৌসী সুমাইয়া (১৯) নামের এক গৃহবধূ। রোববার (১৪ জুলাই) সকালে গৃহবধূ সুমাইয়ার মরদেহ ও চিরকুট উদ্ধারের পর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশ।
সুত্র জানায়, গত ৮ মাস আগে শেরপুর সদর উপজেলার সাপমারী এলাকার শিপন নামের এক যুবককের সাথে ফেসবুকে প্রেম ভালোবাসার মাধ্যমে বিয়ে হয় নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া মন্ডলিয়াপাড়া ইউনিয়নের আবুবকর সিদ্দিকের কন্যা জান্নাতুল ফেরদৌসী সুমাইয়ার। এদিকে অভিভাবকের অসম্মতিতে বিয়ে হওয়ায় মেনে নিচ্ছিল না স্বামী শিপনের পরিবার৷
এ নিয়ে স্বামী স্ত্রী ও পরিবাবের লোকজনদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় প্রায়ই ঝগড়াঝাটি লেগে থাকত। এমনকি শিপন চাকুরী নেওয়ার কথা বলে ৮ লাখ টাকার জন্য সুমাইয়াকে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করতো।এসব বিষয় নিয়ে রাগারাগি করে গত রোজার ঈদের সময় সুমাইয়া তার বাবার বাড়িতে চলে এসে থাকতে থাকেন।
শনিবার রাতে ঘুমানোর আগে সুমাইয়া মনের ক্ষোভে ৭ পৃষ্ঠার চিরকুট লিখে শয়নকক্ষে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেন। এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।চিরকুটে সুমাইয়া লিখেন, বিয়ের গোসল টাও পেলাম না। শেষ গোসল টাও পাব না। জানাযাও পাব না। আমার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। অনেক ভালোবাসি তোমাকে শিপন। কিন্তু তুমি শেষ পর্যন্ত তোমার সাথে থাকতে দিলা না।
তিনি আরো লিখেন, আমি চাইলে দ্বিতীয় বিয়ে করে জীবনটা ভালোভাবে চালাতে পারতাম। কিন্তু আমি চাই না দ্বিতীয় কেউ আমার শরীলটা উপভোগ করুক।বাবা মাকে উদ্দেশ্য করে সুমাইয়া লিখেন, তোমরা মনে কষ্ট নিও না। শিপনকে সুখে রাখার জন্য আমি চলে যাচ্ছি। আমার মুখ তাকে দেখতে দিও না। আমার শরীলটা কাটতে দিওনা। আমি কষ্ট পাব।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল আলম ভুঁইয়া জানান, নিহত সুমাইয়ার মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। একইসাথে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে ওসি জানান।