ঢাকা ০৯:২১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সানন্দবাড়ী ইসলামিয়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদের বিরুদ্ধে বহু অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:২১:৩৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৩৫ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দুর্নীতির মহা উৎসবে মেতে উঠেছেন জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সানন্দবাড়ী ইসলামিয়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদ আকন্দ ।

বিগত ২০/০১/১৯৯৪ ইং সালে মাদ্রাসায় যোগদানের পর থেকেই তিনি একক আধিপত্য বিস্তার করেছেন। অনুগত শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির লোকদের দিয়ে গড়ে তোলেন শক্তিশালী সিন্ডিকেট। একের পর এক মনগড়া সিদ্ধান্ত, অদূরদর্শিতা ও

 

নানা অনিয়মের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন তিনি। শিক্ষার মানোন্নয়নের চেয়ে নিজের আখের ঘুচাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন এই অধ্যক্ষ।সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা জানান, উপজেলা প্রশাসন নিয়ন্ত্রিত

হলেও এই প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদ যেন শেষ কথা।   নিয়োগ বাণিজ্য, রসিদ ছাড়াই অর্থ আদায়, মাদ্রাসার জমি বন্ধক/চুক্তি দিয়ে নিজের পকেট ভর্তি করা, বেতন খুলে দেয়ার কথা বলে টাকা আত্মসাৎ, এনটিআরসিএ কর্তৃক সুপারিশকৃত দুই

জন সহকারী শিক্ষকের কাছে দুই লক্ষাধিক টাকা চাঁদা দাবী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন স্কেল বাড়ানোর নামে শিক্ষকদের টাকা হাতানোসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।অধ্যক্ষের এ দুর্নীতি-অনিয়ম রোধে যেন কোন দায় নেই মাদ্রাসা

পরিচালনা পর্ষদসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।

গত আগস্ট মাসে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দেওয়ানগঞ্জ  উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষিকা,  ছাত্র- ছাত্রী ও বিদ্যুৎসাহী এবং দাতা সদস্যসহ অনেকেই।

এর পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার ০১ সেপ্টম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স বিষয়টি আমলে নিয়ে নিজেই সরেজমিনে তদন্তে আসেন। এসময় সাথে আসেন দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা সেনাকর্মকর্তা বৃন্দ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র

আন্দোলনের উপজেলা সমন্বয়ক বৃন্দ, সানন্দবাড়ী পিআইসির ইনচার্জ আব্দুর রহিম সহ পুলিশ প্রশাসন, চরআমখাওয়া ইউপি চেয়ারম্যান সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

প্রাথমিক তদন্ত শেষে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। দ্রুতই তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

নিয়োগ বাণিজ্য ও স্বজনপ্রীতিকরণ

অভিযোগ রয়েছে, এই প্রতিষ্ঠানে যোগদানের পরই অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তাঁর নিজ এলাকার পরিচিত ব্যক্তিদের নিরাপত্তা কর্মী, আয়া ও হিসাব সহকারী পদে নিয়োগ দিয়েছেন অথচ যদিও সেই পোস্ট গুলোতে নিয়োগ

দেয়ার কথা ছিল স্থানীয় আশেপাশের লোকজনের। জানা যায়, তৎকালীন এই তিন পদে প্রায় ৩০ লক্ষাধিক টাকারও বেশি নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন তিনি। এছাড়াও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাম্প্রতিক বছর কয়েক আগে অফিস সহকারী পদে

ফুলমিয়া নামে ব্যক্তি থেকে ১০ লক্ষাধিক ও আফরোজা নামে শিক্ষকা হিসেবে ১২ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেন। পরে তাদের কোন নিয়োগ দেননি।

তন স্কেল বাড়ানো নামে টাকা হাতানো

ভুক্তভোগী প্রভাষক আকরাম হোসেন বলেন, ‘‘উচ্চতর স্কেলের আবেদনে টাকা ছাড়া সিগনেচার দেন না অধ্যক্ষ। আমার কাছ থেকে বেতন স্কেল বাড়ানোর নাম করে চলতি বছরে কয়েক ধাপে মোট ৪৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন অধ্যক্ষ। আমি

ছাড়াও সেসময় তিনি আরও কয়েকজন শিক্ষকের কাছ থেকে নিয়েছেন হাজার হাজার টাকা। কিন্তু বয়জৈষ্টতা বিবেচনা না করে তার আপন ছোট ভাইকে দেওয়া হয় জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে  নিয়োগ।

নিয়োগের ব্যাপারে ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে ১ লা সেপ্টেম্বর (রবিবার) অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, হ্যাঁ সবগুলোই বিধিসম্মত করা হয়েছে অনিয়ম করা হয়নি আর বিধি সম্মত সরকার বিল দিত

না।নিয়োগ দেয়া বাবদ প্রার্থীদের কাছ থেকে কত টাকা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,খরচ বাবদ যা হয় তাই নেয়া হয়েছে, এগুলো কি বলার অপেক্ষা রাখে.! এ গুলো বলার দরকার আছে..! এটাতো বলার অপেক্ষা রাখে না..! এরপর এই

প্রতিবেদক মাদ্রাসার যাবতীয় আয়-ব্যয়ের ভাউচার রশিদ আছে কিনা দেখতে চাইলে তিনি বলেন,আপনাকে কেন আমি দেখাবো..! আপনাকে কোন তথ্য দিব না আমি.! আর আপনি এসব দেখার অথরিটি না, আপনি আমার বস না, টাইম আছে

আপনাকে দেখার।

পরবর্তীতে এ প্রতিবেদক দেওয়ানগঞ্জ  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্সের কাছে বিষয়টি আলোচনা করলে তিনি ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদ আকন্দকে কোন ছুটি দেন নি তবে তিনি শারীরিক অসুস্থতা দেখিয়ে

ছুটিতে আছে বলে জানিয়েছেন। আগামী ২দিন পর থেকে তার ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

সানন্দবাড়ী ইসলামিয়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদের বিরুদ্ধে বহু অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত

আপডেট সময় : ০৭:২১:৩৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

দুর্নীতির মহা উৎসবে মেতে উঠেছেন জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সানন্দবাড়ী ইসলামিয়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদ আকন্দ ।

বিগত ২০/০১/১৯৯৪ ইং সালে মাদ্রাসায় যোগদানের পর থেকেই তিনি একক আধিপত্য বিস্তার করেছেন। অনুগত শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির লোকদের দিয়ে গড়ে তোলেন শক্তিশালী সিন্ডিকেট। একের পর এক মনগড়া সিদ্ধান্ত, অদূরদর্শিতা ও

 

নানা অনিয়মের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন তিনি। শিক্ষার মানোন্নয়নের চেয়ে নিজের আখের ঘুচাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন এই অধ্যক্ষ।সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা জানান, উপজেলা প্রশাসন নিয়ন্ত্রিত

হলেও এই প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদ যেন শেষ কথা।   নিয়োগ বাণিজ্য, রসিদ ছাড়াই অর্থ আদায়, মাদ্রাসার জমি বন্ধক/চুক্তি দিয়ে নিজের পকেট ভর্তি করা, বেতন খুলে দেয়ার কথা বলে টাকা আত্মসাৎ, এনটিআরসিএ কর্তৃক সুপারিশকৃত দুই

জন সহকারী শিক্ষকের কাছে দুই লক্ষাধিক টাকা চাঁদা দাবী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন স্কেল বাড়ানোর নামে শিক্ষকদের টাকা হাতানোসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।অধ্যক্ষের এ দুর্নীতি-অনিয়ম রোধে যেন কোন দায় নেই মাদ্রাসা

পরিচালনা পর্ষদসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।

গত আগস্ট মাসে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দেওয়ানগঞ্জ  উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষিকা,  ছাত্র- ছাত্রী ও বিদ্যুৎসাহী এবং দাতা সদস্যসহ অনেকেই।

এর পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার ০১ সেপ্টম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স বিষয়টি আমলে নিয়ে নিজেই সরেজমিনে তদন্তে আসেন। এসময় সাথে আসেন দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা সেনাকর্মকর্তা বৃন্দ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র

আন্দোলনের উপজেলা সমন্বয়ক বৃন্দ, সানন্দবাড়ী পিআইসির ইনচার্জ আব্দুর রহিম সহ পুলিশ প্রশাসন, চরআমখাওয়া ইউপি চেয়ারম্যান সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

প্রাথমিক তদন্ত শেষে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। দ্রুতই তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

নিয়োগ বাণিজ্য ও স্বজনপ্রীতিকরণ

অভিযোগ রয়েছে, এই প্রতিষ্ঠানে যোগদানের পরই অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তাঁর নিজ এলাকার পরিচিত ব্যক্তিদের নিরাপত্তা কর্মী, আয়া ও হিসাব সহকারী পদে নিয়োগ দিয়েছেন অথচ যদিও সেই পোস্ট গুলোতে নিয়োগ

দেয়ার কথা ছিল স্থানীয় আশেপাশের লোকজনের। জানা যায়, তৎকালীন এই তিন পদে প্রায় ৩০ লক্ষাধিক টাকারও বেশি নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন তিনি। এছাড়াও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাম্প্রতিক বছর কয়েক আগে অফিস সহকারী পদে

ফুলমিয়া নামে ব্যক্তি থেকে ১০ লক্ষাধিক ও আফরোজা নামে শিক্ষকা হিসেবে ১২ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেন। পরে তাদের কোন নিয়োগ দেননি।

তন স্কেল বাড়ানো নামে টাকা হাতানো

ভুক্তভোগী প্রভাষক আকরাম হোসেন বলেন, ‘‘উচ্চতর স্কেলের আবেদনে টাকা ছাড়া সিগনেচার দেন না অধ্যক্ষ। আমার কাছ থেকে বেতন স্কেল বাড়ানোর নাম করে চলতি বছরে কয়েক ধাপে মোট ৪৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন অধ্যক্ষ। আমি

ছাড়াও সেসময় তিনি আরও কয়েকজন শিক্ষকের কাছ থেকে নিয়েছেন হাজার হাজার টাকা। কিন্তু বয়জৈষ্টতা বিবেচনা না করে তার আপন ছোট ভাইকে দেওয়া হয় জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে  নিয়োগ।

নিয়োগের ব্যাপারে ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে ১ লা সেপ্টেম্বর (রবিবার) অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, হ্যাঁ সবগুলোই বিধিসম্মত করা হয়েছে অনিয়ম করা হয়নি আর বিধি সম্মত সরকার বিল দিত

না।নিয়োগ দেয়া বাবদ প্রার্থীদের কাছ থেকে কত টাকা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,খরচ বাবদ যা হয় তাই নেয়া হয়েছে, এগুলো কি বলার অপেক্ষা রাখে.! এ গুলো বলার দরকার আছে..! এটাতো বলার অপেক্ষা রাখে না..! এরপর এই

প্রতিবেদক মাদ্রাসার যাবতীয় আয়-ব্যয়ের ভাউচার রশিদ আছে কিনা দেখতে চাইলে তিনি বলেন,আপনাকে কেন আমি দেখাবো..! আপনাকে কোন তথ্য দিব না আমি.! আর আপনি এসব দেখার অথরিটি না, আপনি আমার বস না, টাইম আছে

আপনাকে দেখার।

পরবর্তীতে এ প্রতিবেদক দেওয়ানগঞ্জ  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্সের কাছে বিষয়টি আলোচনা করলে তিনি ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদ আকন্দকে কোন ছুটি দেন নি তবে তিনি শারীরিক অসুস্থতা দেখিয়ে

ছুটিতে আছে বলে জানিয়েছেন। আগামী ২দিন পর থেকে তার ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানান তিনি।