ঢাকা ১০:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাফল্যের ধারাবাহিকতায় আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:৪১:৪২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪ ১২ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নরসিংদীর আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ এবারও ধারাবাহিকভাবে সাফল্য ধরে রেখেছে।

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) প্রকাশিত ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে প্রতিষ্ঠানটি থেকে অংশ নেওয়া ১৩৯৫ জন পরীক্ষার্থীর সবাই পাশ করেছে। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১৮১ জন শিক্ষার্থী। যা জিপিএ-৫ এর হার

শতকরা ৮৪.৬৫%।

এবারের ফলাফল গত ৫ আগস্টের গণঅভ্যূথানে নিহত, আহত ছাত্র-জনতাকে উৎসর্গ করেছে পাসকরা শিক্ষার্থী ও কলেজ কর্তৃপক্ষ।

কলেজের প্রশাসনিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ ২০১২ সাল থেকে টানা তিন বছর ঢাকা বোর্ডে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে। ২০১৫ সাল থেকে সেরাদের তালিকা না হলেও নিজেদের সাফল্যের ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রেখেছে। মঙ্গলবার সকালে ফলাফলের খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা কলেজ প্রাঙ্গনে ছুটে আসেন। ফলাফলে এবছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় মোট ১৩৯৫ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে শতভাগ পাশসহ ১১৮১ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৯২৬ জন অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯১০ জন, ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে ১৯১ জন অংশ নিয়ে ১২২ জন ও মানবিক শাখা থেকে ২৭৮ জন অংশ নিয়ে ১৪৯ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।

বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া মোহাইমিনুল কবির আফ্রাদ বলেন, ‘আমাদের শিক্ষক, অভিভাবকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে আমরা ভালো ফলাফল করেছি। আমাদের পরীক্ষা চলাকালে দেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। সেখানে আমাদের অনেক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। তাই আমরা এবারের ফলাফল ছাত্র জনতার আন্দোলনে নিহত ও আহতদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করলাম।’

ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পাওয়া মৃত্তিকা পোদ্দার বলেন, ‘আমরা যদি সবগুলো পরীক্ষা দিতে পারতাম, তাহলে হয়তো আরো ভালো ফলাফল করা সম্ভব হতো। তারপরও শিক্ষকদের নিয়মিত কঠোর ও সঠিক দিক-নির্দেশনা, নিয়মিত ক্লাস, বিশেষ ক্লাস, হোম ভিজিট, টিউটেরিয়াল ও মাসিক পরীক্ষার কারণেই এই ভাল ফলাফল হয়েছে।’

মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী হাফসা বিনতে আমিন বলেন, ‘কলেজের বিষয় ভিত্তিক শিক্ষকসহ গাইড শিক্ষক নিয়মিত আমাদের বাসায় এসে সব বিষয়ে খোঁজখবর নিতেন। এ কারণে আমাদেরকে প্রতিনিয়ত লেখাপড়ায় ব্যস্ত থাকতে হয়েছে, যার কারণে আজ আমাদের এ সাফল্য।

আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও থার্মেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল কাদির মোল্লা বলেন, ‘ সারাদেশের সকল নামী প্রতিষ্ঠানের ফলাফল যখন বিপর্যয় হয়েছে সে তুলনায় আমাদের তরুণ শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে এবং শিক্ষার্থীদের আন্তরিকতায় এবারও আমাদের ফলাফল তুলনামূলক অনেক ভাল। আমাদের শতভাগ পাশ করেছে। এর ধারাবাহিকতা রক্ষায় আমার নিরন্তর চেষ্টা আছে, আগেও ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। আমাদের এবারের ফলাফল গত ৫ আগস্টে নিহত, আহত ছাত্র জনতাকে উৎসর্গ করছি।’

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হেরেম উল্লাহ আহসান বলেন, ‘ এ বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে বিষয়ভিত্তিক পরীক্ষাগুলো না হওয়ায় সারাদেশেই ফলাফল কিছুটা বিপর্যয় হয়েছে। কিন্তু আমাদের কলেজের এ সাফল্য কলেজের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানের সরাসরি কঠোর তদারকি, শিক্ষক, অভিভাবক ও সর্বোপরি শিক্ষার্থীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে সম্ভব হয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠানটি ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর ২০০৮ সালে প্রথম ফলাফলে পাসের হার ৯৯%, ২০০৯ সালে শতভাগ পাসসহ ঢাকা বোর্ডে পঞ্চম এবং সমগ্র বাংলাদেশে ষষ্ঠ স্থান, ২০১০ সালে শতভাগ পাসসহ ঢাকা বোর্ডে চতুর্থ স্থান, ২০১১ সালে ঢাকা বোর্ডে সপ্তম, ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে ঢাকা বোর্ড তথা সমগ্র বাংলাদেশে শতভাগ পাসসহ দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে। পরবর্তীতে শিক্ষাবোর্ড থেকে সেরাদের তালিকা প্রকাশ বন্ধ হলেও সকল ক্যাটাগরিতে ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯, ২০২০, ২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ সালেও দেশ সেরা ফলাফলের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

সাফল্যের ধারাবাহিকতায় আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ

আপডেট সময় : ০৭:৪১:৪২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪

নরসিংদীর আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ এবারও ধারাবাহিকভাবে সাফল্য ধরে রেখেছে।

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) প্রকাশিত ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে প্রতিষ্ঠানটি থেকে অংশ নেওয়া ১৩৯৫ জন পরীক্ষার্থীর সবাই পাশ করেছে। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১৮১ জন শিক্ষার্থী। যা জিপিএ-৫ এর হার

শতকরা ৮৪.৬৫%।

এবারের ফলাফল গত ৫ আগস্টের গণঅভ্যূথানে নিহত, আহত ছাত্র-জনতাকে উৎসর্গ করেছে পাসকরা শিক্ষার্থী ও কলেজ কর্তৃপক্ষ।

কলেজের প্রশাসনিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ ২০১২ সাল থেকে টানা তিন বছর ঢাকা বোর্ডে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে। ২০১৫ সাল থেকে সেরাদের তালিকা না হলেও নিজেদের সাফল্যের ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রেখেছে। মঙ্গলবার সকালে ফলাফলের খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা কলেজ প্রাঙ্গনে ছুটে আসেন। ফলাফলে এবছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় মোট ১৩৯৫ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে শতভাগ পাশসহ ১১৮১ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৯২৬ জন অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯১০ জন, ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে ১৯১ জন অংশ নিয়ে ১২২ জন ও মানবিক শাখা থেকে ২৭৮ জন অংশ নিয়ে ১৪৯ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।

বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া মোহাইমিনুল কবির আফ্রাদ বলেন, ‘আমাদের শিক্ষক, অভিভাবকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে আমরা ভালো ফলাফল করেছি। আমাদের পরীক্ষা চলাকালে দেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। সেখানে আমাদের অনেক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। তাই আমরা এবারের ফলাফল ছাত্র জনতার আন্দোলনে নিহত ও আহতদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করলাম।’

ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পাওয়া মৃত্তিকা পোদ্দার বলেন, ‘আমরা যদি সবগুলো পরীক্ষা দিতে পারতাম, তাহলে হয়তো আরো ভালো ফলাফল করা সম্ভব হতো। তারপরও শিক্ষকদের নিয়মিত কঠোর ও সঠিক দিক-নির্দেশনা, নিয়মিত ক্লাস, বিশেষ ক্লাস, হোম ভিজিট, টিউটেরিয়াল ও মাসিক পরীক্ষার কারণেই এই ভাল ফলাফল হয়েছে।’

মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী হাফসা বিনতে আমিন বলেন, ‘কলেজের বিষয় ভিত্তিক শিক্ষকসহ গাইড শিক্ষক নিয়মিত আমাদের বাসায় এসে সব বিষয়ে খোঁজখবর নিতেন। এ কারণে আমাদেরকে প্রতিনিয়ত লেখাপড়ায় ব্যস্ত থাকতে হয়েছে, যার কারণে আজ আমাদের এ সাফল্য।

আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও থার্মেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল কাদির মোল্লা বলেন, ‘ সারাদেশের সকল নামী প্রতিষ্ঠানের ফলাফল যখন বিপর্যয় হয়েছে সে তুলনায় আমাদের তরুণ শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে এবং শিক্ষার্থীদের আন্তরিকতায় এবারও আমাদের ফলাফল তুলনামূলক অনেক ভাল। আমাদের শতভাগ পাশ করেছে। এর ধারাবাহিকতা রক্ষায় আমার নিরন্তর চেষ্টা আছে, আগেও ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। আমাদের এবারের ফলাফল গত ৫ আগস্টে নিহত, আহত ছাত্র জনতাকে উৎসর্গ করছি।’

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হেরেম উল্লাহ আহসান বলেন, ‘ এ বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে বিষয়ভিত্তিক পরীক্ষাগুলো না হওয়ায় সারাদেশেই ফলাফল কিছুটা বিপর্যয় হয়েছে। কিন্তু আমাদের কলেজের এ সাফল্য কলেজের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানের সরাসরি কঠোর তদারকি, শিক্ষক, অভিভাবক ও সর্বোপরি শিক্ষার্থীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে সম্ভব হয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠানটি ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর ২০০৮ সালে প্রথম ফলাফলে পাসের হার ৯৯%, ২০০৯ সালে শতভাগ পাসসহ ঢাকা বোর্ডে পঞ্চম এবং সমগ্র বাংলাদেশে ষষ্ঠ স্থান, ২০১০ সালে শতভাগ পাসসহ ঢাকা বোর্ডে চতুর্থ স্থান, ২০১১ সালে ঢাকা বোর্ডে সপ্তম, ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে ঢাকা বোর্ড তথা সমগ্র বাংলাদেশে শতভাগ পাসসহ দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে। পরবর্তীতে শিক্ষাবোর্ড থেকে সেরাদের তালিকা প্রকাশ বন্ধ হলেও সকল ক্যাটাগরিতে ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯, ২০২০, ২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ সালেও দেশ সেরা ফলাফলের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে।