ঢাকা ১২:৪৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মানবিকতার আড়ালে আত্মসাৎ!!

নান্দাইল ( ময়মনসিংহ ) প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট সময় : ০১:১৫:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৪ ২৫ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সুন্দর মুখোশ পড়লেই ভিতরের মানুষটি সুন্দর হয় না। আবার সত্যকে কখনো অভিনয় দিয়ে ঢেকে রাখা যায় না।

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় শেরপুর ইউনিয়নের মানবিক কাজের আড়ালে গরিব ও অসহায় পরিবারের নামে অনুদানের অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম শাহ-আলম জসীম। তিনি পাচরূখী মাদারীনগরের হাজী মৌলবী তাহের উদ্দিন মাস্টারের ছেলে।

বর্তমানে পাচরুখী বাজারের সাথে তার নাানার বাড়িতে বসবাস করেন। একাধিক মানবিক সংগঠনের কাজের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বহিস্কৃত হওয়ার পরে তার বাবার নামে ‘হাজী মৌলবী তাহের উদ্দিন মাস্টার ফাউন্ডেশন’-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির পরিচয়ে কাজ করলেও

ফাউন্ডেশনের তিনি একাই হর্তাকর্তা। নিজেই তার প্রতিষ্ঠাতা, নিজেই সব পদ ও দায়িত্বের মালিক। নেই কোনো নির্দিষ্ট কমিটি।   নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, শাহ আলম জসীম এর আগে করোনা কালে প্রবাসী সমাজ কল্যান ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে

থেকে ক্লাবের নামে শেরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী বজলুর রহমান ও এলাকার শামীম নামের একজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ক্লাবের ফান্ডে জমা না দিয়ে নিজেই আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠলে এবং অভিযোগের ভিত্তিতে তথ্য সত্যতা মিললে ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ

থেকে বহিস্কৃত হয়েছিলেন। যার বহিষ্কার কপি অনলাইনে পোস্ট করে সবাইকে সতর্কও করা হয়েছিলো। পরে আবার মানবিক কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করে শেরপুর ইউনিয়ন প্রবাসী ঐক্য পরিষদে সংযুক্ত হন তিনি। পরবর্তীতে শেরপুর ইউনিয়ন প্রবাসী ঐক্য পরিষদ থেকে নানান দূর্নীতির

অভিযোগে তাকে আর কাজ করতে দেওয়া হয়না। তবে এ বিষয়ে ঐক্য পরিষদের দায়িত্বশীল সদস্য নূরে আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জসীম আমাদের পরিষদের সদস্য ছিলো না। কিন্তু সে আমাদের সাথে কাজ করতো। এ হিসাবে আমার নিজস্ব পকেট থেকে কিছু খরচাদি

দিতাম।

এরপর শাহ-আলম জসীম নান্দাইল প্রবাসী সমাজ কল্যান গ্রুপে সংযুক্ত হন। সেখানে তিনি এক মসজিদের ইমামকে গ্রুপের নামে তিন হাজার টাকা দেওয়ার দায়িত্ব দিলে সে খামের ভিতরে পঁচিশ শত টাকা দিয়ে পাঁচশ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে তাকে বহিস্কৃত করা হয়। পরবর্তীতে

আর কোনো ক্লাবে প্রবেশের সুযোগ না পেয়ে নিজেই সভাপতি সেজে নিজের বাবার নামে ফাউন্ডেশন তৈরি করে এলাকার রাজনৈতিক ব্যক্তি ও প্রবাসীদের কাছ থেকে ছলেবলে কৌশলে টাকা নিয়ে দুই ঈদে নাম মাত্র গরীবদেরকে উপহার দিয়ে সাংবাদিকদেরকে রিকুয়েষ্ট করে মিডিয়া ও

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাবে প্রচার করেন। যাতে এসব নিউজকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে পরবর্তীতে আরো বেশি টাকা তার ফাউন্ডেশনের যোগান দিতে পারেন। শাহ-আলম জসীম ২০০৯ সালে ঈমাম হোসেন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে

ফেল করলেও এলাকায় উচ্চ শিক্ষিত বলে পরিচয় দিয়ে মানবিক কাজের আড়ালে নিজের উদ্দেশ্য হাসিল করেন। এ বিষয়ে নান্দাইলে কর্মরত এক সাংবাদিক তার ফাউন্ডেশনের অনুদানের টাকার সোর্স ও কমিটির লিষ্ট সম্পর্কে জানতে চাই সে রাগান্বিত হয়ে উক্ত সাংবাদিককে গালিগালাজ

করে এবং ঐ সাংবাদিকের নামে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আইনি ব্যবস্থা নিবেন বলে হুশিয়ারী দেন।

তার অভিযোগের ব্যাপারে শাহআলম জসীমের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, কাজ করলে কিছু ভুল হতেই পারে। তবে সাংবাদিকে গালি দেইনি।

উল্লেখ্য, শেরপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি সংগঠন এলাকার গরীব ও অসহায় পরিবারের অর্থিক সেবার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ ইউনিয়ন গড়তে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলছেন, পাশাপাশি মাদ্রাসা, মসজিদের উন্নয়নমূলক কাজে ব্যপক সাহায্য করে চলছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

মানবিকতার আড়ালে আত্মসাৎ!!

আপডেট সময় : ০১:১৫:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৪

সুন্দর মুখোশ পড়লেই ভিতরের মানুষটি সুন্দর হয় না। আবার সত্যকে কখনো অভিনয় দিয়ে ঢেকে রাখা যায় না।

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় শেরপুর ইউনিয়নের মানবিক কাজের আড়ালে গরিব ও অসহায় পরিবারের নামে অনুদানের অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম শাহ-আলম জসীম। তিনি পাচরূখী মাদারীনগরের হাজী মৌলবী তাহের উদ্দিন মাস্টারের ছেলে।

বর্তমানে পাচরুখী বাজারের সাথে তার নাানার বাড়িতে বসবাস করেন। একাধিক মানবিক সংগঠনের কাজের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বহিস্কৃত হওয়ার পরে তার বাবার নামে ‘হাজী মৌলবী তাহের উদ্দিন মাস্টার ফাউন্ডেশন’-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির পরিচয়ে কাজ করলেও

ফাউন্ডেশনের তিনি একাই হর্তাকর্তা। নিজেই তার প্রতিষ্ঠাতা, নিজেই সব পদ ও দায়িত্বের মালিক। নেই কোনো নির্দিষ্ট কমিটি।   নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, শাহ আলম জসীম এর আগে করোনা কালে প্রবাসী সমাজ কল্যান ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে

থেকে ক্লাবের নামে শেরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী বজলুর রহমান ও এলাকার শামীম নামের একজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ক্লাবের ফান্ডে জমা না দিয়ে নিজেই আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠলে এবং অভিযোগের ভিত্তিতে তথ্য সত্যতা মিললে ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ

থেকে বহিস্কৃত হয়েছিলেন। যার বহিষ্কার কপি অনলাইনে পোস্ট করে সবাইকে সতর্কও করা হয়েছিলো। পরে আবার মানবিক কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করে শেরপুর ইউনিয়ন প্রবাসী ঐক্য পরিষদে সংযুক্ত হন তিনি। পরবর্তীতে শেরপুর ইউনিয়ন প্রবাসী ঐক্য পরিষদ থেকে নানান দূর্নীতির

অভিযোগে তাকে আর কাজ করতে দেওয়া হয়না। তবে এ বিষয়ে ঐক্য পরিষদের দায়িত্বশীল সদস্য নূরে আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জসীম আমাদের পরিষদের সদস্য ছিলো না। কিন্তু সে আমাদের সাথে কাজ করতো। এ হিসাবে আমার নিজস্ব পকেট থেকে কিছু খরচাদি

দিতাম।

এরপর শাহ-আলম জসীম নান্দাইল প্রবাসী সমাজ কল্যান গ্রুপে সংযুক্ত হন। সেখানে তিনি এক মসজিদের ইমামকে গ্রুপের নামে তিন হাজার টাকা দেওয়ার দায়িত্ব দিলে সে খামের ভিতরে পঁচিশ শত টাকা দিয়ে পাঁচশ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে তাকে বহিস্কৃত করা হয়। পরবর্তীতে

আর কোনো ক্লাবে প্রবেশের সুযোগ না পেয়ে নিজেই সভাপতি সেজে নিজের বাবার নামে ফাউন্ডেশন তৈরি করে এলাকার রাজনৈতিক ব্যক্তি ও প্রবাসীদের কাছ থেকে ছলেবলে কৌশলে টাকা নিয়ে দুই ঈদে নাম মাত্র গরীবদেরকে উপহার দিয়ে সাংবাদিকদেরকে রিকুয়েষ্ট করে মিডিয়া ও

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাবে প্রচার করেন। যাতে এসব নিউজকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে পরবর্তীতে আরো বেশি টাকা তার ফাউন্ডেশনের যোগান দিতে পারেন। শাহ-আলম জসীম ২০০৯ সালে ঈমাম হোসেন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে

ফেল করলেও এলাকায় উচ্চ শিক্ষিত বলে পরিচয় দিয়ে মানবিক কাজের আড়ালে নিজের উদ্দেশ্য হাসিল করেন। এ বিষয়ে নান্দাইলে কর্মরত এক সাংবাদিক তার ফাউন্ডেশনের অনুদানের টাকার সোর্স ও কমিটির লিষ্ট সম্পর্কে জানতে চাই সে রাগান্বিত হয়ে উক্ত সাংবাদিককে গালিগালাজ

করে এবং ঐ সাংবাদিকের নামে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আইনি ব্যবস্থা নিবেন বলে হুশিয়ারী দেন।

তার অভিযোগের ব্যাপারে শাহআলম জসীমের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, কাজ করলে কিছু ভুল হতেই পারে। তবে সাংবাদিকে গালি দেইনি।

উল্লেখ্য, শেরপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি সংগঠন এলাকার গরীব ও অসহায় পরিবারের অর্থিক সেবার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ ইউনিয়ন গড়তে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলছেন, পাশাপাশি মাদ্রাসা, মসজিদের উন্নয়নমূলক কাজে ব্যপক সাহায্য করে চলছেন।