ঢাকা ০৫:২৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নান্দাইলে বিসিআইসির সার ডিলার নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ 

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:২০:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ময়মনসিংহের নান্দাইলের চর বেতাগৈর ইউনিয়নের বিসিআইসির সার ডিলার নিয়োগে মেসার্স নাহার এন্টারপ্রাইজ এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে বাদল হোসাইন নামের এক ইউপি সদস্য। এদিকে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি হলেও অজ্ঞাত কারনে তদন্ত বন্ধ রয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে- বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে  নান্দাইলের চর বেতাগৈর ইউনিয়নের বিসিআইসির ডিলার শূণ্য থাকায় ২০১৯ সালের ৪ ডিসেম্বর ডিলার নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়। সেখানে সেসার্স নাহার এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স স্যাম্বো এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স তাহমিনা আক্তার মীম এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স শাওন ট্রেডার্স ৪ জন আবেদন করেন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ডিলার নিয়োগে কিছু শর্ত দেওয়া হয়। যেখানে পূর্বের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে তার কাগজপত্র সহ দাখিল। আবেদনপত্রের কাগজপত্রে ভূল থাকলে আবেদন বাতিল হবে। ট্রেড লাইসেন্স,গুদামের চুক্তি,দোকানের চুক্তি ৫০ টন ধারন ক্ষমতা থাকতে হবে ইত্যাদি।

এদিকে নাহার এন্টারপ্রাইজ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে অনিয়মের মাধ্যমে ৪০০ নম্বর ক্রমিকে ২০১৬ সালের ১৮ মে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করে যা গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন ট্রেড লাইসেন্স টি জাল বলে প্রত্যয়ন দেন। মেসার্স তাহমিনা আক্তার মীম এন্টারপ্রাইজের চেয়ে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা কম,দোকানের চুক্তিপত্র ৫ বছরের কম দোকান। আর দোকান থেকে গুদাম দেড় কিলোমিটার দূরে থাকার সত্যেও অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে ২০২০ সালের ১৯ আগষ্ট তৎকালীন সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন এমপি ১ নাম্বারে রেখে  আওয়ামীলীগ নেতা চর বেতাগৈর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হোসেনের স্ত্রী মেসার্স শামছুন্নাহার এন্টারপ্রাইজ নামে সুপারিশ করে রেজুলেশন করে পাঠান।

 

পরবর্তী ২০২৩ সালের ১লা নভেম্বর মেসার্স নাহার এন্টারপ্রাইজ কে বিসিআইসি সার ডিলার হিসেবে নিয়োগ দেয়।নিয়োগের পরে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আবেদনকারী বাদল হোসাইন ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক এবং সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এদিকে গত ১২ জুন ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ব্যবসা ও বাণিজ্য শাখার সহকারি কমিশনার মো. শাহনূর রহমান বিসিআইসি সার ডিলার নিয়োগ অভিযোগের তদন্ত করতে নান্দাইল উপাজলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে চিঠি ইস্যূ করে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তদন্ত না করে দেড় মাস পরে  ৩১ জুলাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে চর বেতাগৈর ইউনিয়নের বিসিআইসি ডিলার নিয়োগে অনিয়মের তদন্ত  তিন কার্য দিবসের মধ্যে সরেজমিনে তদন্তের নির্দেশ দেন। কিন্তু ৪৪ কার্য দিবস পার হলেও তদন্ত হয়নি।

অভিযোগকারী বাদল হোসাইন বলেন- মেসার্স নাহার এন্টারপ্রাইজ জাল কাগজপত্র দাখিল করে। অন্য ৪ জন কে কৌশলে বাদ দিয়ে অনিয়মের মাধ্যমে লাইসেন্স ইস্যু করেছে। নিয়োগে মোটা অংকের লেনদেন হয়েছে যা তদন্ত করলেই সত্যটা বেরিয়ে আসবে।

এবিষয়ে নান্দাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান বলেন- ২০২০ সালের ১৯ আগষ্ট উপজেলা সার ও বীজ কমিটি থেকে রেজুলেশনের মাধ্যমে আবেদনকৃত ৪ জনের তালিকা জেলার সার বীজ মনিটরিং কমিটিতে প্রেরণ করা হয়। জেলা সার বীজ মনিটরিং যাচাই-বাছাই পূর্বক বিসিআইসিতে প্রেরণ করে। পরবর্তীতে মেসার্স নাহার এন্টারপ্রাইজ কে অনুমোদন দেওয়া হয়। ইউএনও অফিস থেকে একটি তদন্তের চিঠি পেয়েছি। তবে তদন্তে বিষয়ে আমার কোন বক্তব্য নাই।

নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অরুণ কৃষ্ণ পাল বলেন- অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। তদন্তের দীর্ঘসূত্রতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন তিনি যদি তদন্ত না করে তাহলে আমাকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিলে অন্য কাউকে তদন্তের ভার দেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

নান্দাইলে বিসিআইসির সার ডিলার নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ 

আপডেট সময় : ১১:২০:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ময়মনসিংহের নান্দাইলের চর বেতাগৈর ইউনিয়নের বিসিআইসির সার ডিলার নিয়োগে মেসার্স নাহার এন্টারপ্রাইজ এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে বাদল হোসাইন নামের এক ইউপি সদস্য। এদিকে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি হলেও অজ্ঞাত কারনে তদন্ত বন্ধ রয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে- বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে  নান্দাইলের চর বেতাগৈর ইউনিয়নের বিসিআইসির ডিলার শূণ্য থাকায় ২০১৯ সালের ৪ ডিসেম্বর ডিলার নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়। সেখানে সেসার্স নাহার এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স স্যাম্বো এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স তাহমিনা আক্তার মীম এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স শাওন ট্রেডার্স ৪ জন আবেদন করেন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ডিলার নিয়োগে কিছু শর্ত দেওয়া হয়। যেখানে পূর্বের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে তার কাগজপত্র সহ দাখিল। আবেদনপত্রের কাগজপত্রে ভূল থাকলে আবেদন বাতিল হবে। ট্রেড লাইসেন্স,গুদামের চুক্তি,দোকানের চুক্তি ৫০ টন ধারন ক্ষমতা থাকতে হবে ইত্যাদি।

এদিকে নাহার এন্টারপ্রাইজ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে অনিয়মের মাধ্যমে ৪০০ নম্বর ক্রমিকে ২০১৬ সালের ১৮ মে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করে যা গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন ট্রেড লাইসেন্স টি জাল বলে প্রত্যয়ন দেন। মেসার্স তাহমিনা আক্তার মীম এন্টারপ্রাইজের চেয়ে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা কম,দোকানের চুক্তিপত্র ৫ বছরের কম দোকান। আর দোকান থেকে গুদাম দেড় কিলোমিটার দূরে থাকার সত্যেও অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে ২০২০ সালের ১৯ আগষ্ট তৎকালীন সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন এমপি ১ নাম্বারে রেখে  আওয়ামীলীগ নেতা চর বেতাগৈর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হোসেনের স্ত্রী মেসার্স শামছুন্নাহার এন্টারপ্রাইজ নামে সুপারিশ করে রেজুলেশন করে পাঠান।

 

পরবর্তী ২০২৩ সালের ১লা নভেম্বর মেসার্স নাহার এন্টারপ্রাইজ কে বিসিআইসি সার ডিলার হিসেবে নিয়োগ দেয়।নিয়োগের পরে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আবেদনকারী বাদল হোসাইন ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক এবং সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এদিকে গত ১২ জুন ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ব্যবসা ও বাণিজ্য শাখার সহকারি কমিশনার মো. শাহনূর রহমান বিসিআইসি সার ডিলার নিয়োগ অভিযোগের তদন্ত করতে নান্দাইল উপাজলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে চিঠি ইস্যূ করে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তদন্ত না করে দেড় মাস পরে  ৩১ জুলাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে চর বেতাগৈর ইউনিয়নের বিসিআইসি ডিলার নিয়োগে অনিয়মের তদন্ত  তিন কার্য দিবসের মধ্যে সরেজমিনে তদন্তের নির্দেশ দেন। কিন্তু ৪৪ কার্য দিবস পার হলেও তদন্ত হয়নি।

অভিযোগকারী বাদল হোসাইন বলেন- মেসার্স নাহার এন্টারপ্রাইজ জাল কাগজপত্র দাখিল করে। অন্য ৪ জন কে কৌশলে বাদ দিয়ে অনিয়মের মাধ্যমে লাইসেন্স ইস্যু করেছে। নিয়োগে মোটা অংকের লেনদেন হয়েছে যা তদন্ত করলেই সত্যটা বেরিয়ে আসবে।

এবিষয়ে নান্দাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান বলেন- ২০২০ সালের ১৯ আগষ্ট উপজেলা সার ও বীজ কমিটি থেকে রেজুলেশনের মাধ্যমে আবেদনকৃত ৪ জনের তালিকা জেলার সার বীজ মনিটরিং কমিটিতে প্রেরণ করা হয়। জেলা সার বীজ মনিটরিং যাচাই-বাছাই পূর্বক বিসিআইসিতে প্রেরণ করে। পরবর্তীতে মেসার্স নাহার এন্টারপ্রাইজ কে অনুমোদন দেওয়া হয়। ইউএনও অফিস থেকে একটি তদন্তের চিঠি পেয়েছি। তবে তদন্তে বিষয়ে আমার কোন বক্তব্য নাই।

নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অরুণ কৃষ্ণ পাল বলেন- অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। তদন্তের দীর্ঘসূত্রতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন তিনি যদি তদন্ত না করে তাহলে আমাকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিলে অন্য কাউকে তদন্তের ভার দেওয়া হবে।